শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৮ পূর্বাহ্ন

১৬ দেশকে তথ্যপ্রযুক্তি সহযোগিতা দিচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী

রিপোর্টারের নাম / ১০২ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে

মরুর বুকে মালির বিভিন্ন শহরের ভেতরেই সাধারণ তথ্যপ্রযুক্তিগত যোগাযোগের নেটওয়ার্ক অত্যন্ত দুর্বল। সেখানে বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বড় আয়তনের পুরো দেশটিতে নিয়োজিত শান্তিরক্ষীদের অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক এক ছাতার নিচে এনেছে বাংলাদেশ। কেবল বাংলাদেশের কন্টিনজেন্টগুলো নয়, পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে নিয়োজিত ১৬টি দেশকে তথ্যপ্রযুক্তিগত সব সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যানসিগ-১১ ফোর্স কন্টিনজেন্ট।

এ প্রসঙ্গে ব্যানসিগ-১১ ফোর্স কন্টিনজেন্টের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিদুর রহমান সময়ের আলোকে বলেন, বিশাল আয়তনের দেশটির অধিকাংশ অঞ্চল মরুভূমি। সেখানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে পৃথিবীর ১৬টি দেশের বিভিন্ন কন্টিনজেন্ট দায়িত্ব পালন করছে। এসব কনটিনজেন্টের নিরবচ্ছিন্ন তথ্যপ্রযুক্তিগত বা ‘অপারেশনাল’ যোগাযোগের প্রধান দায়িত্ব পালন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যানসিগ-১১ ফোর্স কন্টিনজেন্ট। ব্যানসিগ মূলত ২০১৪ সালে মালি মিশন শুরু করে। এরপর ২০১৭ সাল থেকে অদ্যাবধি সব দেশের ‘বেতার’ যোগাযোগ নিশ্চিত করছি আমরা।

লে. কর্নেল মহিদুর রহমান বলেন, এটা বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের প্রতি জাতিসংঘ এবং নিয়োজিত দেশগুলোর আস্থার একটি বড় নিদর্শন। ব্যানসিগ-১১ কন্টিনজেন্ট বর্তমানে মালির ফোর্স সদর দফতর, চারটি সেক্টর সদর দফতর এবং বিভিন্ন অঞ্চলে মোতায়েনকৃত সব দেশের কন্টিনজেন্টকে অপারেশনাল এবং অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের নেটওয়ার্ক তৈরি করে দিয়েছে।

সরেজমিন মালির গাও প্রদেশে গেলে সেখানে দেখা যায়, ব্যানসিগ কন্টিনজেন্টের সদর দফতরের কার্যক্রম। সিগন্যাল কন্টিনজেন্টে বেশ কিছু নারী শান্তিরক্ষীও নিয়োজিত আছেন, যারা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করে রিপোর্ট আদান প্রদান করছিলেন। বড় মনিটরে বিভিন্ন দেশের নেটওয়ার্কিং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল। পাশাপাশি যেসব কন্টিনজেন্ট অভিযান এলাকায় চলাচল করছিল তাদের ওইসব এলাকার সম্ভাব্য আগাম কিছু তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জেনে সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। যে কাজগুলো করছিলেন বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন নারী শান্তিরক্ষী। সেখানে এসব কাজের তদারকি করছিলেন ব্যানসিগ কন্টিনজেন্টের মেজর রাশেদ।

এ সময় তিনি বলেন, আমরা এখান থেকে মূলত যেসব কন্টিনজেন্ট বিভিন্ন অঞ্চলে অপারেশনে যায় তাদের মুভমেন্ট, ওই এলাকার আগাম নানা তথ্য এবং তাদের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগব্যবস্থা নিশ্চিত করে থাকি। তবে এখানে মাঝেমধ্যেই যে চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হয় সেটি হচ্ছ-মরুঝড় এবং সোলার প্যানেলের জটিলতা। এসব ক্ষেত্রে যোগাযোগের বিঘ্ন ঘটলে আমরা জিপিআরএস সিস্টেমের মাধ্যমে তথ্য নিয়ে মাঠ পর্যায়ে তাদের জানানোর চেষ্টা করি।

মালিতে মরুর বুকে সরাসরি অভিযান পরিচালনাকারী অন্যতম প্রধান কন্টিনজেন্ট ব্যানব্যাট-৯-এর কমান্ডার (সিসি) কর্নেল মো. আমিনুল হক সময়ের আলোকে বলেন, যেকোনো ধরনের অভিযানে সিগন্যাল ব্যবস্থা একটি গুরুত্বপূর্ণ

ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিগন্যাল কন্টিনজেন্ট মালিতে আভিযানিক নানা বিষয় মনিটরিং করে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে থাকে। যার ফলে অভিযানগুলো সহজে এবং নিরাপদে পরিচালনা করা যায়। গৌরবের ব্যাপার হলো, ব্যানসিগ কন্টিনজেন্ট শুধু বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের নয়, তারা মালিতে নিয়োজিত সব দেশের কন্টিনজেন্ট এবং সদর দফতরগুলোতে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে।

জানা যায়, মালি পশ্চিম আফ্রিকার স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। বিশাল দেশটির আয়তন ১২ লাখ ৪০ হাজার বর্গকিলোমিটার। অথচ জনসংখ্যা ২ কোটির কিছু বেশি। যেখানে ৯২ শতাংশই মুসলিম। আফ্রিকার অষ্টম বৃহত্তম এই রাষ্ট্রের বেশিরভাগ অংশই পৃথিবীর বিখ্যাত সাহারা মরুভূমির সীমানায় পড়েছে। মরুভূমি হওয়ার ফলে এখানকার প্রচ- উত্তপ্ত আবহাওয়া, ধূলিঝড় এবং নানা প্রতিকূলতায় প্রতিনিয়ত এক ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে যাচ্ছেন বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir