শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৬ পূর্বাহ্ন

ভোটের বছরে আগেভাগেই বই ছাপাবে সরকার

রিপোর্টারের নাম / ২৫৩ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে

জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আগেভাগেই নতুন শিক্ষাবর্ষের বই ছাপা শেষ করবে সরকার। কারণ বছরের শেষ দিকে নির্বাচনী কাজে ব্যস্ততা বাড়বে ছাপাখানাগুলোর, দেখা দিতে পারে শ্রমিক সংকটও। রাজনৈতিক কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা। সে হিসেবে দেরি হতে পারে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত পেতে। তাই আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য বিনামূল্যের নতুন বই ছাপা এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিকের নতুন বই ছাপা ও সরবরাহ করা হবে। আর অক্টোবরের মধ্যে শেষ করা হবে মাধ্যমিকের বিভিন্ন শ্রেণির নতুন পাঠ্যবইয়ের ছাপার কাজ ও সরবরাহ। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এনসিটিবি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য অ্যানুয়াল প্রকিউরমেন্ট প্ল্যান (এপিপি) ও টাইম বাউন্ড অ্যাকশন প্ল্যান (টিএপি) অনুমোদন সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিপিই) শাহ রেজওয়ান হায়াতসহ অন্যরা অংশ নেন। ডিপিই মহাপরিচালক সভায় বলেন, চলতি বছর জাতীয় নির্বাচনের বছর হওয়ায় বছরের শেষ দিকে শ্রমিক সংকট দেখা দিতে পারে। তাছাড়া কাগজ উৎপাদনকারী এবং মুদ্রণ কারখানা একসঙ্গে নির্বাচনী সামগ্রী এবং পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের কার্যক্রম পরিচালনায় সক্ষম নাও হতে পারে। তাই এই বাস্তবতার নিরিখে অন্য বছরের তুলনায় আগামী শিক্ষা বছরের জন্য পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের কার্যক্রম এগিয়ে আনার পক্ষে মত দেন তিনি।

গণশিক্ষা সচিব সভায় বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষের অভিজ্ঞতা ও বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের সময়সূচি এগিয়ে আনা প্রয়োজন। কোনো মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণে অপারগ হলে পুনঃদরপত্র আহ্বানের যথেষ্ট সুযোগ রাখা এবং প্রয়োজনে বিজি প্রেসের মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আগামী শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিকের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করতে উপস্থিতরা একমত পোষণ করেন।

জানা গেছে, চার ধাপে প্রাথমিক পর্যায়ের দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। প্রথম, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির জন্য প্রথম ধাপ, প্রাক-প্রাথমিকের জন্য দ্বিতীয় ধাপ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য তৃতীয় ধাপ এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির জন্য চতুর্থ ধাপে দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে এনসিটিবি। রেসপনসিভ দরদাতা পাওয়া না গেলে পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে পুনঃদরপত্র আহ্বান করতে হবে। ইন্সপেকশন এজেন্ট নিয়োগের প্রয়োজন থাকলে এনসিটিবি এ এজেন্ট নিয়োগ করবে। সব পাঠ্যপুস্তকের ব্রাইটনেস ৮০ থেকে ৮২ রাখতে হবে, এ ছাড়া থিকনেস ৮০ জিএসএম রাখার মত দেন সভার উপস্থিতরা। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম গতকাল প্রতিবেদককে বলেন, বই ছাপার কাজ এগিয়ে আনতে ইতোমধ্যে প্রাথমিকের প্রথম, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই ছাপার টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। এসব শ্রেণিতে নতুন বই সংযোজন হবে। সার্বিক বিবেচনায় মাধ্যমিকের সব বই ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই ছাপা ও সরবরাহ শেষ করতে চাই। এ লক্ষ্যে চলতি মাসের ১৫ মার্চের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির বই ছাপার টেন্ডার আহ্বান করা হবে। এরপর ক্রমে অন্য শ্রেণির বই ছাপার টেন্ডার দেওয়া হবে। এনসিটিবি চেয়ারম্যান আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনের বছর হওয়ায় বই ছাপার কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বই ছাপা কাজে প্রেস মালিকদের জিম্মি করার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এসব প্রেস মালিকদের বই ছাপতে মেশিনের সক্ষমতার যতটুকু না অভাব, তার চেয়ে বড় অভাব তাদের ব্যবস্থাপনার। তাদের কারণে যেন নতুন বই পেতে বিলম্ব না হয় সেটিও বিবেচনায় রাখা হয়েছে। এসব নানা কারণেই নতুন বছরের বই ছাপাকাজ এগিয়ে নেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir