ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টরের উপস্থিতিতে বহিরাগতদের অস্ত্র এনে শিক্ষার্থীদের হত্যার হুমকি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া বিপুল হোসাইন খান। জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় বিপুলের শ্যালক রকির সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
বুধবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়ে ঘটনা ঘটে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর হাত ভেঙ্গে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র হাসিব ও তার বন্ধুরা জিয়া মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এসময় বহিরাগত রকি, শান্ত বেপরোয়া গতিতে বাইক চালিয়ে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় দিয়ে যাচ্ছিল। এসময় রকির বাইক হাসিবের ডান হাতে লাগে। পরে হাসিব রকিকে কয়েকবার বাইক থামাতে বলার পর ক্রিকেট মাঠ সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু হল পুকুড় পাড়ের এক মুদি দোকানের সামনে বাইক থামান।
এসময় উভয়ের মাঝে কথা-কাটাকাটি হলে হাসিব ক্ষিপ্ত হয়ে রকিকে থাপ্পড় দেয়। পরে রকি ও তার বন্ধুরা ওই দোকানের পিছন থেকে স্ট্যাম্প নিয়ে তেড়ে এসে হাসিবকে মাথায় মারতে উদ্যত হয় বলে অভিযোগ হাসিবের। এসময় হাসিব ঠেকাতে গেলে বাম হাতে গুরুতর আঘাত লাগে।
অন্যদিকে হাসিবের বন্ধু সালমানসহ অন্যান্যরা রকি ও তার বন্ধুদের মারধর করে। এতে রকি পাশের ড্রেনে পরে জখম হন। জানা যায়, হাসিবও তার সহযোগীরা ছাত্রলীগ নেতা শাহজালাল সোহাগের অনুসারী। এছাড়া বহিরাগত রকি ছাত্রলীগ নেতা বিপুল হোসেন খানের শ্যালক বলে জানা গেছে।
এরপর ছাত্রলীগ নেতা বিপুল, অনিক, সোহাগ ঘটনাস্থলে আসে মীমাংসার জন্য। তবে মীমাংসা করতে গেলে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এসময় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করে।
পরে ইফতারের সময় হলে বিপুল ও তার কর্মীরা হলে চলে যায়৷ এর কিছুক্ষণ পর শেখ রাসেল হলের পাশে কয়েকজন বহিরাগতকে দেশীয় অস্র হাতে দেখা যায়। এদিকে সোহাগের কর্মীরা জিয়া মোড়ের পাশে ক্রিকেট মাঠে অবস্থান নেয়।
বহিরাগত রকি বলেন, আমি ও আমার বন্ধুরা ইফতার কিনতে গিয়েছিলাম। তারা কয়েকজন রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। আমি গিয়ে দোকানের সামনে বাইক ব্রেক করি। বিষয়টা সিম্পল ছিল। কিন্তু কিছু বুঝে উঠার আগেই হাসিব আমাকে থাপ্পড় মারে। কথা কাটাকাটির পর্যায়ে তাদের সাথে হাতাহাতি হয়। তারা আমাকে মারতে মারতে ড্রেনে ফেলে দেয়।
এ বিষয়ে হাসিব বলেন, রকি পিছনে তাকিয়ে এক হাতে বেপরোয়া গতিতে বাইক চালাচ্ছিল। এসময় আমার হাতের সাথে ধাক্কা লাগে। আমি তাকে কয়েকবার ডাকাডাকির পর বাইক থামায়। সেখানে কথা বলার পর্যায়ে তুই-তুকারি করলে আমি থাপ্পড় দেই। পরে বহিরাগতরা একটি দোকানের পিছন থেকে স্ট্যাম্প নিয়ে এসে আমার মাথায় আঘাতের চেষ্টা করে। আমি ঠেকাতে গেলে বাম হাতে ভেঙ্গে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বরত মিজান বলেন, সন্ধ্যার দিকে হাতে গুরুতর আঘাত একটি ছেলে মেডিকেলে আসছিল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়ায় এক্স-রে করার জন্য পাঠানো হয়।
এবিষয়ে প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেনের একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করে নি। পরে তাঁকে মুঠোফোনে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেন নি।